হারুন অর রশীদ,
ফরিদপুর থেকে:
একটি পাঠাগারবিহীন সমাজ, একটি আলোকবিহীন অন্ধকারের মতো। মানবিক বিকাশে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে গ্রন্থাগার হচ্ছে মননশীল মানুষ গড়ার সত্যিই এক বড় সেতুবন্ধন। তাইতো জ্ঞানার্জনের একটা বড় জায়গা হলো গণগ্রন্থাগার। সকল পাঠকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে অবাধে তথ্য ও জ্ঞান আহরণের সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমাজকে জ্ঞানের আলোয় বিকশিত করার লক্ষে কাজ করে চলেছে ফরিদপুরের ময়েজউদ্দিন জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার। এর অবস্থান জেলা শহরের কমলাপুরের ময়েজউদ্দিন স্কুল সংলগ্ন।
যেখানে রয়েছে বিনামূল্যে সব শ্রেণির পাঠকদের জন্য মনোরম পরিবেশে সংগৃহীত ৩৬০০০ বই পাঠের সুবিধা, ন্যূনতম নিরাপত্তা জামানত প্রদানের মাধ্যমে সদস্যপদ ও বই ধার সুবিধা, প্রতিদিন দশ থেকে বারোটি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকী পাঠের সুবিধা,পুরাতন বাঁধাই পত্রিকা পাঠের সুযোগ,শিশুদের জন্য শিশু কিশোরদের বই সংবলিত পৃথক শিমু কর্ণার, চাকুরি প্রার্থীদের জন্য পৃথক জব কর্ণার, গ্রন্থাগারে বই সমূহ থেকে প্রয়োজনীয় অংশ ফটোকপির সুযোগ, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে রচনা, আবৃত্তি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, ফ্রি ইন্টারনেট ও ওয়াইফাই সুবিধা, রয়েছে পাঠকদের জন্য মনোরম পাঠকক্ষ।
ইংরেজি বিভাগ থেকে মাষ্টার্স শেষ করা এই গণগ্রন্থাগারটির নিয়মিত পাঠক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, আমরা যারা অনার্স-মাষ্টার্স শেষ করে চাকুরী প্রত্যাশী তাদের জন্য চাকুরীর প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য একটি ভালো জায়গা এ গণগ্রন্থাগারটি। লাইব্রেরীর পরিবেশটাও অসাধারণ। এছাড়া লাইব্রেরীর কর্তৃপক্ষও বেশ পাঠকবান্ধন।
এখানে পাঠ করতে আসা তমা দেবী শিকদার নামে রাজেন্দ্র কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানের পরিবেশটা অনেক ভালো লাগে। পরিবেশটাও খুব পাঠ উপযোগী। পাঠ করার জন্য পর্যাপ্ত বই রয়েছে। সবাইকে দেখে পড়ার আগ্রহ জাগে। তাইতো কলেজ শেষে নিয়মিত ছুটে আসি।
অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অঞ্জনা দাস বলেন, লাইব্রেরীতে এসে আমার পড়ালেখার আগ্রহটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। পরিবেশটা অনেক পাঠকবান্ধব।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী সুফিয়ান সুজন জানালেন, এখানে রয়েছে দেশ বিদেশের প্রায় ৩৬ হাজার বই। রয়েছে স্থানীয়সহ ১০-১২ টি জাতীয় পত্রিকা পাঠের সুবিধা। তাইতো নিয়মিত ছুটে আসি এই প্রাঙ্গণে। একরকম প্রেমে পড়ে গিয়েছি এই গণগ্রন্থাগারটির।
গ্রণগ্রন্থাগারটির সহকারী লাইব্রেরিয়ান ও ইনচার্জ মোঃ আমির হোসেন বলেন, পাঠকদের কথা মাথায় রেখে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। আমরা শিশু পাঠকদের জন্য শিশু কর্ণার, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার, বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার, পাঠকদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওজন মাপার মেশিন কিনে দিয়েছি, পাঠকদের জন্য খাবার ও নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা অতি শ্রীঘ্রই আলাদা “ফরিদপুর কর্ণার” নামে একটি অঙ্গণ সংযোজন করবো। যেখানে শুধুমাত্র ফরিদপুরের লেখকদের বই থাকবে।
এএস/ডিএ
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস